লক্ষ্মীপুরে জাবেদ হত্যা: শ্রমিকলীগ নেতাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রতিবেদক : এমএন /আর
প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ৯:১৫ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে পুলিশের কথিত ডাকাতের দু’পক্ষের গোলাগোলির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে জাবেদ হোসেন মিন্টু নামে এক যুবক নিহতের ঘটনায় শ্রমিকলীগ নেতাসহ মোছন (৫০)সহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। মোছন সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি।

পরিবারের দাবী জাবেদকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যার পর ডাকাতের গোলাগুলিতে নিহত বলে প্রচার করা হয়েছে। রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) নিহতের মাতা ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে মোছনকে প্রধান করে ১০জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২৫ জনকে আসামী করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট চন্দ্রগঞ্জ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য চন্দ্রগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেন। সোমবার (২০ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় নিহতের পরিবারের লোকজন সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, চরশাহী ইউনিয়নের শ্রমিকলীগ নেতা মোছন এর সাথে জাবেদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) জাবেদ বাড়িতে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলো। এসময় মোছেনের নেতৃত্বে ওয়ার্ড আ’লীগ নেতা সিরাজসহ সাদা পোশাকদারী ৪০/৫০ জনের একদল সন্ত্রাসী বাড়িতে হামলা চালায়।

এক পর্যায়ে তারা অস্ত্রের মুখে জাবেদকে পিটিয়ে তুলে নিয়ে যায়। পরেদিন বুধবার সকালে জানতে পারি জাবেদের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ খাগোড়িয়া গ্রামে রাস্তার পাশে পড়ে আছে। এসময় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা না নিয়ে ফেরত পাঠায়।

নিহত জাবেদ সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের ইটখোলা গ্রামের বাবা হোসেন আহমদ ও ফাতেমা বেগমের ছেলে। সে একজন সিএনজি চালক। অপরদিকে অভিযুক্ত মোছেন একই ইউনিয়নের সহিদপুর গ্রামের কোবছা মাঝির ছেলে। তিনি চরশাহী ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি এবং সিরাজ ওই ইউনিয়নের ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি বলে জানা যায়।

এদিকে জাবেদ ডাকাত দলের সাথে সংশ্লিষ্টতা ছিলোনা দাবী করে নিহতের স্ত্রী নাছিমা বেগম জানান, তার স্বামীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অথচ পুলিশ ডাকাত দলের গোলাগুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে মর্মে চালিয়ে দেয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন তিনি।

বাদী পক্ষের আইনজীবি (এ্যাডভোকেট) মো. ইউসুফ চৌধুরী বলেন, জাবেদ হত্যার ঘটনায় আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন। মামলাটি তদন্তের জন্য চন্দ্রগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, লক্ষ্মীপুরের চরশাহী ইউনিয়নের খাগোড়িয়া এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জাবেদ হোসেন মিন্টুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ৮ রাউন্ড গুলি, ১০টি গুলির খোসা উদ্ধার করে পুলিশ।

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তার হোসেন জানান, দুই দল ডাকাতের মধ্যে গোলাগুলির পর ঘটনাস্থল থেকে ডাকাত সর্দার মিন্টুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে।

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন