লক্ষ্মীপুরে উৎপাদনের অর্ধেক ধান যাবে দাদনধারের গোলায়

প্রতিবেদক : এমএন /আর
প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর, ২০১৭ ৬:৩৩ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরে কৃষকদের এখন ধান কাটার মৌসুম। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়েছে। তাদের মুখে থাকার কথা হাঁসি। এখনো হতাশা রয়েছে কৃষকরা। কারন এ অঞ্চলের কৃষকদের নিজস্ব ভুমি ও টাকা না থাকায় দাদনের টাকা দিয়ে করতে হয় কৃষি কাজ। আমন ধান উৎপাদনেও দাদন নিয়েছে তারা। দাদনের টাকা দিয়ে চাষ-বাস করে যাচ্ছে অধিকাংশ কৃষকর। ফলে উৎপাদনের অর্ধেক ধান যাচ্ছে দাদনধারদের ঘরে। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে কৃষকরা পাচ্ছে প্রায় ১লাখ ৯৪ হাজার ৩৭০ মে.টন আমন ধান।
এছাড়াও মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টিতে বিপাকে পড়তে হয়েছে কৃষকদের। একাধিকবার আমনের বীজতলা ডুবে গেছে। পচে নষ্ট হয়ে গেছে ধানের চারা। বেশির ভাগ কৃষক অন্যত্র থেকে চারা সংগ্রহ করে ধান চাষ করেছেন। পরবর্তীতে পোকা কিংবা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগের মুখে পড়তে হয়নি কৃষকদের। এখন কৃষকরা ধান কেটে গোলা ভরছেন।


কমলনগরের হাজিরহাট গ্রামের কৃষক হারুনুর রশিদ জানান, এ অঞ্চলের অধিকাংশ কৃষকের নিজস্ব ভুমি নেই। জমি নিতে হয় বর্গা। অন্যদিকে কৃষকদের কাছে টাকা না থাকায় দাদনধারদের কাছ থেকে দ্বিগুন সুদে টাকা নিতে হয়। এ কারনে উৎপাদন ভালো হওয়া শর্তেও কৃষকরা লাভবান হতে পারে না। লাভবান হচ্ছে দাদনধার।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৫ উপজেলায় হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ২১ হাজার ৯২৫ হেক্টর, রায়পুরে ৭ হাজার ৮৯৫, রামগঞ্জে ২ হাজার ৮০৫, রামগতি ২১ হাজার ৫২৫ ও কমলনগরে ১৯ হাজার ৭ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। মোট ৭৩ হাজার ১৫৭ হেক্টর। এরমধ্যে হাইব্রিড ৫৩৫ হেক্টর, উফশী ৫৭ হাজার ৬২২ ও স্থানীয় জাতের ১৫ হাজার হেক্টর।

কৃষকের গোলায় উঠছে ১ হাজার ৫১৭ মে.টন হাইব্রিড, ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৩৭ মে.টন উফশী ও ৮হাজার ১৬ মে.টন স্থানীয় জাতের ধান। এ মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৪৩৩ মে.টন। অর্জিত হচ্ছে প্রায় ২ লাখ মে.টন।
কলনগরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিক উলল্লাহ মুরাদ বলেন, গত কয়েক বছর থেকে স্থানীয় জাতের ধানের আবাদ কমে উফশী জাতের আবাদ বেড়েছে। বেশি ফলন হওয়ায় কৃষকদের হাইব্রিড ও উফশীতে আগ্রহ।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খাঁন বলেন, ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পাশে আছেন। প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে আবাদ করায় কৃষকরা কাঙ্খিত ফসল পাচ্ছেন। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে; আশার করছি কৃষকদের প্রত্যাশা পূরণ হবে।

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন