গাজার অর্ধেক জনসংখ্যা অনাহারে, হুঁশিয়ারি জাতিসংঘের

প্রতিবেদক : এমএন/ এমএস
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

ইসরায়েলের বর্বরোচিত বিমান হামলায় বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। স্থল পথেও সেনা অভিযান চলার কারণে ভূখণ্ডটিতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। এ অবস্থায় জাতিসংঘ হুঁশিয়ারি উচ্চারন করেছে। জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন ত্রাণ কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধের কারণে গাজার অর্ধেক জনসংখ্যা অনাহারে রয়েছে।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়।

 

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ডেপুটি ডিরেক্টর কার্ল স্কাউ বলেছেন, গাজায় যে পরিমাণ সহায়তা প্রয়োজন তার খুব কম অংশই সেখানে সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে এবং গাজার ১০ জনের মধ্যে ৯ জন মানুষই প্রতিদিন খেতে পারেন না।

স্কাউ বলেন, গাজার চলমান পরিস্থিতির কারণে সেখানে সহায়তা সরবরাহ ‘প্রায় অসম্ভব’ হয়ে উঠেছে।

গাজার দক্ষিণে অবস্থিত খান ইউনিস শহরের পরিস্থিতিও খুবই ভয়াবহ। শহরের একমাত্র অবশিষ্ট স্বাস্থ্য কেন্দ্র নাসের হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি এবং বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আহমেদ মোগরাবি খাবারের অভাব নিয়ে বিবিসির সাথে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, ‘আমার তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে, সে সবসময় আমার কাছে কিছু মিষ্টি, কিছু আপেল, কিছু ফল চায়। আমি দিতে পারি না। আমি অসহায় বোধ করি। পর্যাপ্ত খাবার নেই, পর্যাপ্ত কোনও খাবারই নেই, শুধুমাত্র ভাত, শুধুমাত্র ভাত আছে- আপনি বিশ্বাস করতে পারেন? আমরা দিনে একবার, মাত্র একবার খাই।’

অবশ্য ইসরায়েল বলছে, হামাসকে নির্মূল করতে এবং ইসরায়েলি বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যেতে হবে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচট শনিবার বিবিসিকে বলেছেন, ‘কোনও বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু এবং দুর্ভোগ আমাদের কাছে বেদনাদায়ক, তবে আমাদের কাছে আর কোনও বিকল্প নেই’। তার দাবি, ‘গাজা ভূখণ্ডের ভেতরে যতটা সম্ভব অগ্রগতি অর্জন করতে আমরা সবকিছু করছি।’

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ৫০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। যাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই রয়েছেন নারী ও শিশু। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

 

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন