কমলনগরে প্রার্থীদের আপত্তি প্রিজাইডিংয়ে, বহিরাগতরাই সুষ্ঠু নির্বাচনে শঙ্কা

প্রতিবেদক : এমএন/ এমএস
প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর, ২০২১ ১০:৫১ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে পিজাইডিং অফিসার নিয়োগে আপত্তি তুলেছেন প্রার্থীরা। সোমবার (৮নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার হাজিরহাট উপকূল কলেজ মিলনায়তনে প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ আপত্তি জানানো হয়। এসময় বহিরাগতদের দাপটে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।

নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন বিষয়ে জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ ও পুলিশ সুপার ড. এএইচএম কামরুজ্জামান প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় দুই কর্মকর্তা প্রার্থীদেরকে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দেন। এসময় কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুদম পুষ্প চাকমা, কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন, রির্টানিং কর্মকর্তা ড. জায়েদুল হোসেন চৌধুরী।

এদিকে প্রার্থীরা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা, মাইক ছিনতাই, হুমকি ও মারধরের অভিযোগ করেছেন। সংঘাত ও প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নির্বাচনে প্রত্যেক কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছেন চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীরা।

চরকাদিরা ইউনিয়নে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী আশ্রাফ উদ্দিন রাজন রাজু (মোটরসাইকেল) বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাগর পছন্দের প্রিজাইডিং নিয়োগে প্রভাব বিস্তার করেছেন। প্রিজাইডিং নিয়োগে অনিয়ম রয়েছে। এছাড়া প্রতিদিনই তিনি বহিরাগতদের এনে এলাকায় ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহও (হাতপাখা) বহিরাগতদের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন দাবি করেছেন।

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাগর (নৌকা) বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তার ইউনিয়নে মাদকসেবী ও সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে। তিনি মাদকসেবী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন।

চরমার্টিন ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গির আলম (মোটরসাইকেল) বলেন, আমার প্রচারণায় প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইউছুফ আলীর লোকজন বাধা দিচ্ছেন। প্রচারের সময় মাইক ছিনতাই এবং অপারেটরকে মারধর করে মোবাইল নিয়ে যায়। এসব বিষয়ে রির্টানিং কর্মকর্তা কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

নৌকার প্রার্থীর লোকজনের হুমকিতে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন বলে প্রশাসনকে জানিয়েছেন চরমার্টিনের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকছুদুর রহমান (আনারস)। নৌকার প্রার্থীর পক্ষে বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে নৌকার প্রার্থী ইউছুফ আলী মিয়া বলেন, মেম্বার প্রার্থীদের আত্মীয়-স্বজনরা নির্বাচনী এলাকায় আসার কারণে এখানে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। তিনিও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা করেন।

এদিকে চরলরেন্স ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেও সদস্য প্রার্থীরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।

জেলা পুলিশ সুপার ড. এএইচএম কামরুজ্জামান প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অবাধ ও সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন দিতে আমরা প্রস্তুত। আমরা নির্বাচনী আইন অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো। কোন অন্যায়কারীকে ছাড় দেওয়া হবে না। কেউ কোন বিশেষ সুবিধা পাবে না।

জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে। আমরা বিন্দুমাত্র নির্বাচনী আচরণবিধির ব্যত্যয় ঘটতে দেবো না। তবে প্রার্থীদের সচেতন হতে হবে। নির্বাচনী অচরণ বিধিও মেনে চলতে হবে।

প্রসঙ্গত, ১১নভেম্বর দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে কমলনগর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে এবং রামগতির একটি ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। কমলনগরে সভা শেষে রামগতি উপজেলার চরগাজীর ইউনিয়নের প্রার্থীদের সাথেও মতবিনিময় করেন প্রশাসন।

 

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন