রায়পুরের সেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

প্রতিবেদক : এমএন/ এমএস
প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল, ২০২২ ১০:০৯ অপরাহ্ণ

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এলকেএইচ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে চাকরিতে নিয়োগের কথা বলে পাঁচ লাখ টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু প্রার্থী হুমায়ুন কবিরকে চাকরি দেওয়া হয়নি। বছর পার হলেও টাকাও ফেরত দেয়নি প্রধান শিক্ষক। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে ভুক্তভোগী হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় তিনি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল (রায়পুর) আদালতেও মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিদ্যালয়ের ছাত্রদের দিয়ে জোরপূর্বক ব্যবসায়ীর জমি দখলচেষ্টার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানসহ দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (রায়পুর) ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া এ মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী হুমায়ুন উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের মোল্লাবাড়ির আবদুর রশিদ মোল্লার ছেলে।

হুমায়ুনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী পদে ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। এর ভিত্তিতে চাকরিটির জন্য হুমায়ুন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন। একপর্যায়ে তিনি চাকরি পাইয়ে দেবেন বলে হুমায়ুনের কাছ থেকে আট লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছেন। এতে রাজি হয়ে হুমায়ুন ওই বছরের ১ মার্চ চরবংশী গ্রামের বাড়িতে গিয়ে শিক্ষককে পাঁচ লাখ টাকা দেন। বাকি টাকা নিয়োগের পর পরিশোধ করা হবে বলে উভয় পক্ষ একমত হন।

এদিকে একই বছর ২৮ মার্চ লিখিত পরীক্ষা ও ৭ এপ্রিল ভাইভা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। নিয়োগ ও টাকা ফেরত দিতে সময়ক্ষেপণ করায় ২৬ আগস্ট হুমায়ুন ওই শিক্ষকের বাড়িতে যান। এতে শিক্ষক তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে ১ সেপ্টেম্বর হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করলে শিক্ষককে ডাকা হয়। তখন ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেবেন বলে পুলিশের কাছে তিনি মৌখিকভাবে স্বীকার করেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। এতে ১৬ অক্টোবর চরবংশী গ্রামে দেখা হলে হুমায়ুন তার কাছ থেকে টাকায় চান। কিন্তু টাকা দেবে না বলে জানান শিক্ষক।একপর্যায়ে হুমায়ুনকে হত্যা, লাশ গুম ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেওয়া হয়। এতে বাধ্য হয়ে হুমায়ুন বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল (রায়পুর) আদালতে শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ১২ ডিসেম্বরে মামলা দায়ের করেন।
হুমায়ুন কবির বলেন, চাকরি দেবে বলে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্তু আমাকে চাকরিও দেয়নি। আমার টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। টাকা চাইলে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। আমি টাকা ফেরত চাই।

প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, হুমায়ুনের বাবা আবদুর রশিদ মোল্লা তখন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। আমাকে তিনি টাকা দিতে যাবেন কেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চাকরিটির জন্য হুমায়ুন আমার কাছে এসেছে। অবৈধভাবে তাকে চাকরি না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিজাম উদ্দিন বলেন, তদন্ত করা শেষ হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনও আদালতে জমা দিয়েছি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে কি না তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন