রায়পুর ইউএনও-এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রতিবেদক : এমএন/ এমএস
প্রকাশিত: ১৭ মার্চ, ২০২২ ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের ইউএনও অনজন দাশ ও এসিল্যান্ড রাসেল ইকবাল বিরোধীয় জমি কেনার পাঁয়তারা করছেন। এনিয়ে বিরোধীয় জমি নিয়ে করা ভূক্তভোগী জাহাঙ্গীর কবিরকে হুমকি দিচ্ছেন ওই দুই কর্মকর্তা। এতে পরিবার নিয়ে জাহাঙ্গীর আতঙ্কে রয়েছেন। বুধবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুরে একটি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড শিবপুর গ্রামের মৃত মোবারক আলী ভূঁইয়ার ছেলে।

লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর বলেন, আমার চাচা বেলাল হোসেন ভূঁইয়ার সঙ্গে ৯৬ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। জমিটির মূল্য প্রায় ৮০ লাখ টাকা। বিরোধীয় জমিটি রায়পুর ইউএনও ও এসিল্যান্ড সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পের জন্য কেনার পাঁয়তারা করছেন। আমার চাচার সঙ্গে কথাবার্তা চূড়ান্ত করলেন। এতে বেলাল ওই জমি থেকে গাছ কাটার জন্য চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় আমি ২৩ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রায়পুর এসিল্যান্ড ও থানাকে নির্দেশ দেয়। আগামি ১৮ মে পর্যন্ত ওই জমিতে কোন কাজ যেন না করা হয় তার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আদালতের আদেশ পেয়ে রায়পুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জাহাঙ্গীর আলম উভয়পক্ষকে নোটিশ দিয়েছেন।

এদিকে মামলার দিন রায়পুর উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে মামলার কাগজপত্র আদালত থেকে পাঠানো হয়। কাগজপত্র পেয়েই এসিল্যান্ড রাসেল ইকবার মুঠোফোনে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় জাহাঙ্গীরকে তিনি ধমক দিয়ে বলেন, ‘মামলার কাগজে ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর নেই। মিথ্যে মামলা দিয়ে বেলালকে হয়রানি করা হচ্ছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য জমিনে কেনার বিষয়ে সকল কথাবার্তা শেষ পর্যায়ে। এ জমি নিয়ে কোনভাবেই বাধা দেবেন না’।

অন্যদিকে বুধবার দুপুরে বিরোধীয় জমি থেকে বেলাল গাছ কাটা শুরু করে। খবর পেয়ে জাহাঙ্গীর গিয়ে বাধা দেয়। এতে বেলালের ফোন পেয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সহকারী রাব্বী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহমুদুল হাসান লোকজন নিয়ে আসেন। এসময় তারা জাহাঙ্গীরকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে রাব্বী তার মোবাইলফোন দিয়ে জাহাঙ্গীরকে ইউএনও অনজন দাশের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। এসময় জাহাঙ্গীরকে হুমকি দিয়ে ইউএনও বলেন, গাছ কাটতে বাধা দিয়েছেন কেন? এতে জাহাঙ্গীর আদালতের নির্দেশনার কথা জানালে ইউএনও বলেন, জমিটি তারা ক্রয় করেছেন। জমি দখলে যাওয়ার পরে তারা টাকা লেনদেন করবে। যদি বাধা দেন তাহলে আপনাকে (জাহাঙ্গীর) গ্রেফতার করানো হবে। আপনার বিভিন্ন ধরণের বিপদ হবে। বাড়িছাড়া হতে হবে।

জাহাঙ্গীর বলেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ইউএনও জোরপূর্বক জমিটি আমার চাচাকে দখল করে দেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছেন। আমাকে তিনি বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিয়েছেন। পরিবার নিয়ে এখন আমার আতঙ্কে দিন কাটছে।

বিরোধীয় জমি আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য কেন নিচ্ছেন- এ প্রশ্নে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেল ইকবাল বলেন, জমিটি নিস্কন্টক। প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য আমরা জমিটি কিনবো। সকল কথাবার্তা সম্পন্ন হয়েছে। মামলা নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছি। আশা করি দ্রুত এটি নিস্পত্তি হবে। কিন্তু জাহাঙ্গীর জমি নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করছে। আর তাকে আমি কোন হুমকি দেইনি। তার সঙ্গে আমার কোন কথাও হয়নি।

এ ব্যাপারে রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনজন দাশ বলেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। গাছ কাটা সমস্যা সৃষ্টি হলে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানতে পারি। জাহাঙ্গীরকে কাগজপত্র নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। তাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগটি সত্য নয়।

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন