বাজারে গিয়ে মানুষ জেনেছে লক্ষ্মীপুর লকডাউন !

প্রতিবেদক : এমএন/ এমএস
প্রকাশিত: ১৬ জুন, ২০২০ ৫:৪৫ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:  করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবরোধে বিকাল ৪টার পরই সরকারি নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী দোকানপাট বন্ধ করে বাড়ি চলে যায় ব্যবসায়ীরা। আবার সকালের দোকান খোলার চিন্তায় খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু ‘রেড জোন’ এলাকা চিহ্নিত করে গতকাল সোমবার রাত ১০টার পরে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৫ (আংশিক), ৬, ৭ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচারণা চলানো হয়। কিন্তু তখন বাজার শূন্য, মানুষজন বাড়িতে ঘুমে রয়েছে।

এদিকে রবিবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লক্ষ্মীপুর জেলা পুরো লকডাউন এই ঘোষণা ভাইরাল হয়েছে। যদিও জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পালের বক্তব্য ছিল লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি।

সোমবার রাত ১০টার দিকে সাংবাদিকদের মুঠোফোনে জেলা প্রশাসক বক্তব্য দিয়েছেন, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৫ (আংশিক), ৬, ৭ ও ১৫নম্বর ওয়ার্ড, রায়পুর পৌরসভা, রামগতি পৌরসভা, রামগঞ্জ পৌরসভা, কমলনগরের কয়েকটি ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরই জেলা দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় তথ্য বিভাগের পক্ষ থেকে মাইকিং করতে শোনা যায়। যদিও জনশূন্য ছিল পুরো বাজার।

আবার আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত একটি গণবিজ্ঞপ্তি তাঁর ফেসবুক পেইজে লক্ষ্য করা যায়। তবে রাতের প্রচরণা ও সাংবাদিকদের দেওয়া বক্তব্যের সঙ্গে মিল ছিলো না। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১, ২ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডও লকডাউনের তালিকায় বেড়ে গেছে।

সবমিলিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন নিয়ে জনমনে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। জেলা প্রশাসকের এই গণবিজ্ঞপ্তিতে পৌরসভার রেড জোন এলাকাগুলো স্থান পেলেও পায়নি অন্যান্য উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়নের নাম। অবশ্যই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা তাদের স্ব স্ব উদ্যোগে পৌরসভা ও ইউনিয়ন লকডাউন করেছেন। এরমধ্যে কমলনগর উপজেলায় ১৫ জুন থেকে লকডাউন চলছে। তবে গত দুবারের চেয়ে এবার কঠোরভাবে লকডাউন চলছে।

অন্যদিকে সোমবার দিনভর লকডাউন সম্পর্কে জেলা প্রশাসকের ঘোষণা না মঙ্গলবার সকালে দোকানপাট ও কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বের হয় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ঠিক তখনই জানতে পারে লক্ষ্মীপুর পৌরসভায় রেডজোন ভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও ওষুধের ফার্মেসি ছাড়া বন্ধ থাকবে লক্ষ্মীপুর শহরের অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো।

এসব ঘটনায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সচেতন মহল। তাদের ভাষ্যমতে, জনগণের উদ্দেশ্যে দেওয়া যে কোন নির্দেশনা সহজ ভাষায় ও পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করতে হবে। কিন্তু জেলা প্রশাসন সেটি না করে ধুম্রজাল সৃষ্টি করেছে। মানুষ যখন ঘুমে তখন লক্ষ্মীপুর পৌরসভায় রেড জোন ভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। যা অনেকেই জানেন না। এমন পরিস্থিতে পুরো জেলায় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

জেলা সিভিল সার্জন সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ পর্যন্ত ৪ হাজার ১৪৪ জনের করোনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪৮ জন করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে জেলার রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার, কমলনগরের চরলরেন্স, চরফলকন, হাজিরহাট, তোরাবগঞ্জ, সদরের দক্ষিণ হামছাদী, দালাল বাজার, পার্বতীনগর, বাঙ্গাখাঁ, মান্দারী, চন্দ্রগঞ্জ, কুশাখালী, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১, ২, ৫, ৬, ৭, ১১, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড, রায়পুর পৌরসভা ও রামগঞ্জ পৌরসভাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এসব এলাকাকে সম্পূর্ণভাবে লকডাউন করতে চলছে মাইকিং। জরুরি প্রয়োজন ও পরিষেবা ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া, সকল যানবাহন চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ রাখার জন্য বলা হচ্ছে।

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন