নিষেধাজ্ঞা শেষ, মেঘনায় ইলিশ শিকারে জেলেরা

প্রতিবেদক : এমএন /আর
প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর, ২০১৮ ৫:৫০ অপরাহ্ণ

বিশেষ প্রতিনিধি: নিষেধাজ্ঞা শেষ, মেঘনায় মাছ শিকারে বাঁধা আর নেই কোন। জেলেরাও ইলিশ শিকারে নদীতে নৌকা ভাসিয়েছেন। শুরু হয়েছে তাদের ইলিশ ধরার উৎসব। মেঘনায় এখন ছোট-বড় শত-শত নৌকার ভীড় দেখা যাচ্ছে। মাছঘাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগম বাড়ছে। লক্ষ্মীপুরের অর্ধলক্ষাধিক জেলে আবার কর্মজীবনে ফিরে গেছেন। এতে জেলে পল্লীতেও উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।

সোমবার (২৯ অক্টোবর) সকালে লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি, কমলনগর ও রায়পুর উপজেলার মেঘনাপাড়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, মধ্যরাত থেকে জেলেরা নদীতে নৌকা ভাসিয়েছেন। যারা রাতে যাননি তারা সকালে মাছ শিকারে নদীতে পাড়ি জমিয়েছেন। জেলেদের মাঝে এখন আনন্দ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৬০ হাজার জেলে রয়েছেন। যাদের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম হচ্ছে মেঘনা। নিষেধাজ্ঞার সময় তাদেরকে বেকার জীবনযাপন করতে হয়। এসময় ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জেলেদেরকে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু লক্ষ্মীপুরে ৬০ হাজার জেলের মধ্যে ৩৭ হাজার ৩৬২ জেলে চাল পাচ্ছেন। এরমধ্যে অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা টাকার বিনিময়ে অন্য পেশার মানুষকে এর আওয়াতা এনেচেন।
স্থানীয় জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞা থাকায় ২২ দিন তারা মাছ শিকার থেকে বিরত ছিলেন। শুধু মাছ ধরাই একমাত্র পেশা হওয়া হওয়ায় এ দিনগুলোতে অলস সময় পার করতে হয়েছে তাদের। ফের তাদের মাছ ধরার উৎসব শুরু হয়েছে। তারা আশা করছেন এবার প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা সময় মেঘনায় মাছ শিকারের দায়ে ৩৭ জেলেকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে ভ্রাম্যমান আদালতে মাধ্যমে বিভিন্ন দন্ডে-দন্ডিত করা হয়। তবে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার ইলিশ রক্ষা অভিযান অনেক বেশি সফল হয়েছে। এতে সরকারি আইন বাস্তবায়নে মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি প্রশাসনের ব্যাপক ভূমিকা ছিল। ইউনিয়ন পরিষদ, পুলিশ ও কোস্টগার্ড অভিযানে অংশ নেয়। এসময় বরফ কলের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা বিষয়ক সভা-সভাবেশ করা হয়েছে। এতে করে স্থানীয়দের জেলেদের মধ্যে সচেতনতা এসেছে।

রামগতি উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন ও কমলনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল কুদ্দুস জানান, ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসুম ছিল। এ ২২দিন লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সকল প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এসময় ইলিশ ক্রয়-বিক্রয়, সংরক্ষণ পরিবহন বাজারজাতকরণ ও মজুদ নিষিদ্ধ ছিল। আরোপিত সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। রোববার (২৮ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে মাছ ধরতে শুরু করেছে জেলেরা।

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মহিব উল্যাহ বলেন, নদীতে নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। এখন আর মাছ শিকারে কোন বাঁধা নেই। মধ্যরাত থেকে জেলেরা নদীতে ফের মাছ শিকারে নেমেছে। আশা করি তাদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন