লক্ষ্মীপুরে নোমান-রাকিব হত্যা : জামিনে মুক্ত হয়ে আসামির শোডাউন

নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরে আলোচিত যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমাম হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দেওয়ান ফয়সাল জামিনে মুক্ত হয়েছেন। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গলায় ফুলের মালা পড়িয়ে শতাধিক মোটরসাইকেল শোডাউনের মাধ্যমে তাকে বরণ করে নেয় তার অনুসারীরা।

আসামি ফয়সালের বড় ভাই রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্চু জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘১৫ দিন আগে উচ্চ আদালত ফয়সালকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন। জামিনের আদেশ লক্ষ্মীপুর কারাগারে পৌঁছতে সময় লেগেছে। সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলা কারগার থেকে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়ে রামগঞ্জের পানপাড়া বাজার থেকে তাকে বরণ করে নেয়। মামলায় লক্ষ্মীপুর আদালতে গিয়ে ফয়সাল নিয়মিত হাজিরা দেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাই দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে রামগঞ্জ থানায় একটি জিডিও নেই। তবে সে বন্ধু পরায়ণ। বন্ধুত্বের টানে সে বশিকপুর যাওয়া আসা করত। ঘটনার দিন তার মোটরসাইকেলটি নষ্ট হয়ে যায়। এতে সে মোটরসাইকেলটি নাগেরহাট বাজারের পাশে রেখে আসে। পরে নোমান ও রাকিব হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়। উচ্চ আদালতের মাধ্যমে তাকে জামিনে মুক্ত করে এনেছি। আমার ভাই খুনের সঙ্গে জড়িত নয়।’

ফয়সাল রামগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক। জোড়া খুন মামলায় গ্রেপ্তারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে দল থেকে তাকে গত ৪ মে বহিষ্কার করে জেলা কমিটি।

গত ২৫ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দারবাজার এলাকায় জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন রাতে নিহত নোমানের বড় ভাই ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কাশেম জিহাদীকে প্রধান করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ জনকে আসামি করা হয়।

ঘটনার পর ১ মে র‍্যাব-১১ মামলার ৩ নম্বর আসামি দেওয়ান ফয়সালকে ঠাকুরগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন রাতে লক্ষ্মীপুর আদালতে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিল বলে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন সময় এ মামলায় ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশেম জিহাদীকে এখনো আটক করা যায়নি।