কোপা আমেরিকা থেকে ব্রাজিলের বিদায়

শুরু থেকেই ব্রাজিলের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করে উরুগুয়ে। প্রথমার্ধে দুই দলই অসংখ্য সুযোগ পেয়েও পায়নি জালের দেখা। দ্বিতীয়ার্ধেও উভয় দলই শুরু থেকেই গোলের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে কড়া ট্যাকল করে লাল কার্ড দেখেন উরুগুয়ে মিডফিল্ডার নাহিতাস নান্দেজ। কিন্তু দশজনের দলের বিপক্ষেও সুযোগটা নিতে পারেন দরিভাল জুনিয়রের শিষ্যরা। শেষ পর্যন্ত কোনো পক্ষই গোল না পাওয়ায় ম্যাচের ভাগ্য টাইব্রেকারে। সেখানে উরুগুরুয়ের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন গোলরক্ষক। ব্রাজিলের একটি শট ঠেকিয়ে দেন সার্জিও রকেট। পরে সেলেসাওদের আরেকটি শট লাগে গোলবারে। শেষ পর্যন্ত তার নৈপুণ্যে ব্রাজিলকে কোপা আমেরিকা থেকে বিদায় করে সেমিফাইনালে উঠার আনন্দে মাতে উরুগুয়ে।
রোববার বাংলাদেশ সময় সকালে টাইব্রেকারে ব্রাজিলকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল। এরআগে দুই দলের মধ্যেকার নির্ধারিত সময়ের খেলা গোল শুন্য ড্রয়ে শেষ হয়েছিল।
টাইব্রেকারে শনিবার উরুগুয়ের হয়ে প্রথম টাইব্রেকার নিতে আসেন ফেদে ভালভার্দে। কোনো ভুল করেননি তিনি। বামপ্রান্তে ঝাঁপ দিয়েছিলেন অ্যালিসন বেকারও। কিন্তু বলের নাগাল পাননি। ব্রাজিল অবশ্য প্রথম শটটাই মিস করে, এডার মিলিটাওয়ের শট ফিরিয়ে দেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক সার্জিও রকেট। উরুগুয়ে দ্বিতীয় শটেও সফল হয়। আন্দ্রেস পেরেইরা ব্রাজিলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন দ্বিতীয় শট নিতে এসে।
এদিকে তৃতীয় শটেও গোল পায় উরুগুয়ে, ব্রাজিল আবার মিস করে। ফলে অনেকটা ছিটকেই যায় পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু অ্যালিসন উরুগুয়ের চতুর্থ শট ফিরিয়ে ব্রাজিলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লিও হতাশ করেননি। কিন্তু পঞ্চম শট নিয়েই ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দেয় উরুগুয়ে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেয় ব্রাজিল।
এরআগে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ, রোনাল্ড আরাওহোর সঙ্গে রাফিনহার বাকবিতণ্ডা, সেখানে আবার সতীর্থদের জড়িয়ে পড়া; অনেক কিছুই ছিল ব্রাজিল-উরুগুয়ের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথমার্ধে। এ অর্ধে শুধু গোলই পায়নি দল দুটি।
ডারউইন নুনেজ আর রদ্রিগোদের কয়েকটি সুযোগ নষ্টে বাড়তে থাকে ম্যাচের বয়স। অবশ্য মিনিট দশেকের মাথায় নুনেজ যে বার ব্যর্থ হন, সেটাকে সুযোগ নষ্ট বলা যায় কই! ভেসে আসা বলটার গতি এত বেশি ছিল যে, ঠিকঠাক মাথা লাগাতে পারেননি তিনি। অ্যালিসন বেকার হয়তো তখন হাফছেড়ে বাঁচেন।
২৮ মিনিটে সবচেয়ে বড় সুযোগটা নষ্ট করে ব্রাজিল। ডি বক্সের ভেতর এন্দরিক বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন রাফিনহাকে। কিন্তু বার্সা ফরোয়ার্ড বলের কাছে যাওয়ার আগেই বিপদমুক্ত হয় উরুগুয়ে। মিনিট কয়েক পর নুনেজের হেড যায় ব্রাজিলের পোস্টের কয়েক হাত ওপর দিয়ে। পরক্ষণেই কাউন্টার অ্যাটাকে গিয়ে দারুণ সম্ভাবনা সত্ত্বেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল। প্রথমার্ধের শেষদিকে ব্রাজিল ও উরুগুয়ে আরও কয়েক বার গোল পেয়েও পায়নি!
দ্বিতীয়ার্ধে কয়েক বার হাতাহাতিও হয় দুদলের মধ্যে। কিন্তু চির আকাঙ্খিত গোলটা মিলছিল না। ৭৪ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে। বল নিয়ে দৌড়াতে থাকা রদ্রিগোকে পেছন থেকে পায়ে ট্যাকেল করেন নাহিতান নান্দেজ। প্রথমে তাকে হলুদ কার্ড দেন রেফারি। কিন্তু ভিএআর রিভিউয়ের পর লাল কার্ড দেখিয়ে নান্দেজকে মাঠছাড়া করেন রেফারি।
১০ জনের দলে পরিণত হলেও রক্ষণে ধৈর্য্যের পরিচয় দেয় উরুগুয়ে। বারবার আক্রমণ সামলানো দলটি ৯০ মিনিট পর্যন্ত ব্রাজিলকে আটকে রাখতে সক্ষম হয়। যে কারণে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে নায়ক বনে গেলেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক সার্জিও রকেট।